আনোয়ারায় বোরোর বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

Boro-Paddy-An2018-696x404

আনোয়ারায় বোরো ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে নতুন ধান কাটা। এ বছর তুলনামূলক ধানের ফলন অনেক বেশি হওয়ায় গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। তবে সব ধান ঘরে তুলতে আরও কয়েকটা দিন অনুকূল আবহাওয়ার প্রত্যাশা করছেন তারা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চাষিরা বলেন, আগাম বৃষ্টি না হওয়ায় ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি। পাশাপাশি খেতে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও কম ছিল। এ ছাড়া এবার ফসলের খেতে সময়মতো পানি ও সার দিতে পেরেছেন তাঁরা। মূলত এসব কারণে বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার ১১ ইউনিয়নে ৬ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এবার উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৬ হাজার ৩০০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ হাজার ৭৩৫ মেট্রিক টন চাল। তবে উৎপাদন ২৬ হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন কৃষি অফিস।

গত বছর অকাল বৃষ্টি ও বন্যা ভাসিয়ে নিয়েছিল কৃষকের কষ্টে বোনা স্বপ্নের ধান। তখন ছিল শুধু কৃষকের কান্না আর হাহাকার। তবে প্রকৃতি এবার দু’হাত ভরে দান করেছে কৃষকদের। বাতাসে দোল খাচ্ছে সোনারাঙা পাকা ধান। তা দেখে কষ্টের সেই দিনগুলোর কথা ভুলে, আবারও নতুন স্বপ্ন দেখছেন তারা। ধান কাটার উৎসবে মেতে উঠেছে জমির পর জমি।

হাইলধরের কৃষক আবু জালারের চোখমুখে আনন্দের ছাপ। তিনি বলেন, ‘গতবার ৩ কানি (১২০ শতক) জমিতে বোরো চাষ করেছিলাম। এবার চাষ করেছি ৫ কানি জমিতে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, এক সপ্তাহের মধ্যে সব ধান ঘরে উঠবে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমার মতো অনেক কৃষকই বেশি জমিতে ধান চাষ করেছেন এবার।’

উপজেলার হাইলধর ইউনিয়নের পীরখাইন গ্রামের চাষি জাকের হোসেন বলেন, আমি ৫০ শতক জমিতে বোরো চাষ করেছি। খরচ বেশি হওয়ার সত্ত্বেও ভালো ফসলের আশা করছি

জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা সরোয়ার আলম বলেন, আমরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ধান মাড়াই করে ফলনের নমুনা (ক্রপ কাটিং) সংগ্রহ কাজ শুরু করেছি। সংগৃহীত নমুনা থেকে দেখা যাবে, হেক্টর প্রতি ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা।

গুয়াপঞ্চক গ্রামের কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা হলে জানা গেছে, গতবছর আগাম বন্যায় তাদের সব ধান পানিতে ডুবে যায়। বর্তমানে ৯৫ ভাগ ধান ইতোমধ্যে পেকে যাওয়াতে ধান কাটা শুরু হয়েছে। প্রকৃতির অবস্থা এখনও ভালো আছে। আরও ১০–১৫ দিন আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার শতভাগ ধান কেটে নিয়ে যেতে পারার ব্যাপারে আশাবাদী তারা।

Leave a comment