কফি পান করুন, দীর্ঘদিন বাঁচুন

mcbloc

Post Your News, Views, Conscience etc on MCB20090129-17434241312Citizen Journalism

carousel4-180415100721🙂 Please make sure this service remains a free forever service for you by visiting our this above & bellow sponsors, by the way- sponsor’s informative ad also inform you on latest trends. 🙂carousel3-180619150417

mcbloc

Content is Continuing from here …

44469098_303mcbm

সারা বিশ্বে রয়েছে মোট ৪০ রকমের কফি ৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, কফি পান করা খুবই স্বাস্থ্যকর৷ তবে কফি পান করার কিছু নিয়মও রয়েছে ৷ যেমন কফির সাথে দুধ এবং চিনি মেশালে কফির উপকারিতা কমে যায়৷ ঠিক যেমনটা হয়ে থাকে চায়ের ক্ষেত্রে৷ তাই কালো কফি পান করাই সকলের জন্য উত্তম ৷


কফি হার্টের জন্য ভালো নয়, কফি খেলে রক্তচাপ বাড়ে অথবা কফি খেলে ঘুম হয় না – এ রকম নানা কথাই শোনা যায়৷ কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে,কফি যে শুধু বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে রাখে তাই নয়, কফি পান করে দীর্ঘজীবীও হওয়া যায়৷ 

Symbolbild: Hetero Paar im Cafe (picture-alliance/dpa/C. Klose)

কফি হৃদপিণ্ডের জন্য বিপজ্জনক নয়!

জার্মানির ড্যুসেলডর্ফ শহরের হাইনরিশ হাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের করা সাম্প্রতিক এক গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়, কফির ক্যাফেইন হার্টের পেশীকে শক্ত করে এবং ধমনীকে সুরক্ষা করে সংক্রমণ থেকে দূরে রাখে৷

Ruhrgebiet Kaffeekränzchen (picture-alliance/AP)

গবেষণার ফলাফল

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানে করা সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, যাঁরা কফি পান করেন তাঁরা যাঁরা কফি পান করেন না তাঁদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচেন৷ এই তথ্যের সাথে একমত পোষণ করেছে ইউরোপীয় তথ্য সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান ইপিআইসি, কারণ তাদের করা দীর্ঘমেয়াদি এক গবেষণার ফলাফলেও উঠে এসেছে এই একই তথ্য৷

Melanoma - Hautkrebs - Illustration der Krebszellen (Imago/Science Photo Library/A. Pasieka)

বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়

নিয়মিত চার কাপ কফি পান করলে মস্তিষ্ক, মুখের ভেতর, লিভার, পেট এবং প্রস্টেট ক্যাসারের ঝুঁকি কমে৷

Symbolbild: Japanische Ärztin (Imago/O. Maksymenko)

রক্তচাপ কি বাড়ে?

কফি পান করলে প্রথমে রক্তের চাপ বাড়ে বটে, তবে তা শুধুমাত্র কয়েক মুহূর্তের জন্য৷ সুইজারল্যান্ডের গবেষকরা ১৬,০০০ মানুষকে নিয়ে করা এক সমীক্ষায় তুলে ধরেছেন এ তথ্য৷

 

Autorin Kati Krause

নারীদের বিষণ্ণতায় কফি

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালের করা গবেষণা থেকে জানা গেছে, যেসব নারী দিনে প্রতিদিন চার কাপ কফি পান করেন, তাঁদের ডিপ্রেশন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি গড়ে শতকরা ২০ ভাগ কমে যায়৷ ৫০,০০০ অ্যামেরিকানদের নিয়ে দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে করা এক গবেষণা থেকে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে৷

Kaffee (picture-alliance/Anka Agency International/G. Lacz)

কালো কফির বেশি উপকার

সারা বিশ্বে রয়েছে মোট ৪০ রকমের কফি৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, কফি পান করা খুবই স্বাস্থ্যকর৷ তবে কফি পান করার কিছু নিয়মও রয়েছে৷ যেমন কফির সাথে দুধ এবং চিনি মেশালে কফির উপকারিতা কমে যায়৷ ঠিক যেমনটা হয়ে থাকে চায়ের ক্ষেত্রে৷ তাই কালো কফি পান করাই সকলের জন্য উত্তম৷

Philippinen Mütter Aktion für das Stillen in Manila (Getty Images/AFP/N. Celis)

যাঁদের কফি পান করা ঠিক নয়

শিশুর ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব এড়াতে যাঁরা গর্ভবতী ও যাঁরা শিশুকে বুকের দুধ পান করান, তাঁদের কফি পান করা থেকে দূরে থাকা উচিত বলে পরামর্শ গবেষকদের৷

Krebs Arzt Diagnose Symbol (picture alliance / dpa)

প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমে

৭,০০০ ইটালিয়ানকে নিয়ে চার বছর ধরে করা এক সমীক্ষা থেকে জানা যায়, দিনে তিন কাপ ‘এসপ্রেসো’ কফি পান করলে প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি অর্ধেক কমে যায়৷ তথ্যটি প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ক্যানসার৷

Zimt (Colourbox/Haivoronska_Y )

কফিতে দারচিনি গুঁড়ো

কফিতে এক চিমটি দারচিনি বা দারুচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে নিলে যেমন বাড়তি স্বাদ এনে দেবে, তেমনি ডায়বেটিস রোগীর রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখবে৷ তাছাড়া দারচিনি শরীরের চর্বি ক্ষয় হতেও সহায়তা করে বলে জানান ডায়বেটিস বিশেষজ্ঞ মাটিয়াস রিডল৷


20090129-17434241312

Post your News, Views, Conscience etc.


বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী যত মিষ্টি !

মিষ্টির ঐতিহ্য বাংলাদেশে বহুকালের৷ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু ও ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্নের সমাহার৷ ছবিঘরে দেখুন তার কিছু নমুনা৷

default

পোড়াবাড়ির চমচম

টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচমকে বলা হয় মিষ্টির রাজা৷ যমুনার শাখা নদী ধলেশ্বরীর তীরের গ্রাম পোড়াবাড়িতে প্রথম এই মিষ্টি তৈরি শুরু হয়৷ এখানকার নদীর পানি নাকি সেই মিষ্টির স্বাদে আলাদা একটা বিশেষত্ব যোগ করত৷ প্রায় দেড়শ বছর আগে ভারতের উত্তর প্রদেশের বালিয়া জেলার জনৈক রাজা রাম গোরার হাতে জন্ম হয় সুস্বাদু এই চমচমের৷

default

নাটোরের কাঁচাগোল্লা

এটি নাটোরের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন৷ ছানাকে চিনির ঘন সিরায় ডুবিয়ে বিশেষভাবে পাক দেয়ার পর ছেঁকে নেয়া এক ধরনের মিষ্টি হলো নাটোরের বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা৷

default

নওগাঁর প্যারা সন্দেশ

নওগাঁর প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন প্যারা সন্দেশ৷ জনশ্রুতি আছে, বহুকাল আগে নওগাঁ শহরের কালিতলার মহেন্দ্রী দাস নামে এক ব্যক্তি প্রথমে প্যারা সন্দেশ তৈরি শুরু করেন৷ প্যারা সন্দেশ তৈরির সময় তরল দুধের সাথে চিনি মিশিয়ে তা ভালোভাবে জ্বাল করে ক্ষীর তৈরি করা হয়৷ ক্ষীর যখন জড়িয়ে আসতে শুরু করে তখন গরম ক্ষীর দু’হাতের তালুর মাঝে সামান্য চাপ দিতে হয়৷ এভাবেই তৈরি হয় প্যারা সন্দেশ৷

default

কুমিল্লার রসমালাই

কুমিল্লার রসমালাইয়ের যাত্রা মাতৃভাণ্ডার এর হাত ধরে৷ আদিতে এর নাম ছিল ক্ষীরভোগ৷ পাকিস্তান আমলে অবাঙালিরা এসে এ ক্ষীরভোগকে রসমালাই বলতে শুরু করে৷ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বেশ কিছু মাতৃভাণ্ডার থাকলেও আসল প্রাচীন মাতৃভাণ্ডারটি কুমিল্লা শহরের মনোহরপুরে৷

default

জামতলার রসগোল্লা

যশোরের শার্শা উপজেলার জামতলার রসগোল্লার সুনাম দেশজোড়া৷ প্রায় ৫০ বছর আগে জামগাছের নীচে একটি চায়ের দোকানে জনৈক সাদেক আলী এই মিষ্টির জনক৷ জনশ্রুতি আছে, তাঁর কাছে কিছু সময়ের জন্য আশ্রয় নেয়া এক আগন্তুক তাঁকে এই মিষ্টি তৈরির পদ্ধতি শিখিয়েছিলেন৷ তবে বর্তমানে জামতলা বাজারে এখন প্রায় পনেরজন ব্যবসায়ী সাদেক আলীর উদ্ভাবিত সেই রসগোল্লা তৈরি করেন৷

default

নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি

নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি আকারে বালিশের মত বড় নয়, কিন্তু আকৃতিগত দিক থেকে অনেকটাই বালিশ সদৃশ৷ দুধ, ছানা, চিনি আর ময়দা মিশিয়ে তৈরি হয় মিষ্টি৷ নেত্রকোনা শহরের গয়ানাথের দোকানে পাওয়া যায় প্রসিদ্ধ এ মিষ্টি৷ দেখতে অনেকটা চমচমের মতো৷ প্রতিটির ওজন ২০০ গ্রাম থেকে এক কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে৷

default

মুক্তাগাছার মণ্ডা

ময়মসিংহের মুক্তাগাছার মিষ্টি মণ্ডার সুনাম দেশজোড়া৷ মুক্তাগাছার তারাটি গ্রামের গোপাল পাল নামে এক ময়রা ১৮২৪ সালে বিশেষ এ মিষ্টান্ন তৈরি শুরু করেন৷ তাঁর পরিবার পাঁচ পুরুষ ধরে এখনো তৈরি করেন এ মণ্ডা৷

default

বরিশালের আদি রসগোল্লা

বরিশালের রসগোল্লার স্বাদই আলাদা৷ বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের রসগোল্লা থেকে এটি স্বতন্ত্র৷ এ মিষ্টির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এতে মিষ্টির পরিমাণ খুবই কম৷ দেশি গরুর দুধ, উন্নতমানের চিনি আর কাঠের চুলা এ মিষ্টি তৈরির মূল উপাদান৷ বরিশাল অঞ্চলের সর্বত্রই এ মিষ্টি পাওয়া যায়৷

default

নাটোরের ছানার জিলাপি

নাটোরের ছানার জিলাপিও বিখ্যাত৷ তবে এ মিষ্টির উত্পত্তি ভারতের নদিয়ার মুড়াগাছা অঞ্চলে৷ ছানার জিলাপি আসলে জিলাপির মতো নয়৷ ছানা দিয়ে তৈরি রসে ভেজানো এক ধরনের মিষ্টান্ন৷

default

গুটিয়ার সন্দেশ

বরিশালের গুটিয়া বাজারের সন্দেশের সুনাম দেশজুড়ে৷ গরুর দুধের ছানা দিয়ে তৈরি এ মিষ্টান্ন খুবই মজাদার৷

default

আরও যত বিখ্যাত মিষ্টি

বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন রয়েছে৷ যেমন ফরিদপুরের মালাই সর, দিনাজপুরের গুড় ক্ষীরমোহন, রংপুরের হাবসি হালুয়া, রাজশাহীর রসকদম, পাবনার ইলিশপেটি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী, খেপুপাড়ার জগার মিষ্টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আদি চমচম, মেহেরপুরের সাবিত্রী মিষ্টি ও রসকদম, পাবনার বটফল, ফরিদপুরের বাগাট রাজকুমারের সাগরভোগ, বরিশালের রসের সন্দেশ, বগুড়ার আদি মহররমের দই, বরিশালের গৌরনদীর দই ইত্যাদি৷

default

বাংলার মিষ্টি

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী সব মিষ্টি এক ছাদের নীচে নিয়ে এসেছে ঢাকার ৬০ গুলশান অ্যাভিনিউতে অবস্থিত দোকান ‘বাংলার মিষ্টি’৷ এখান থেকে ঐতিহ্যবাহী সব মিষ্টি কেনা ছাড়াও দোকানে বসেই খেতে পারবেন যে কেউ৷

চীনে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মুসলমানের বাস৷

চীনে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মুসলমানের বাস৷ উইগুর মুসলিমদের উপর নিপীড়নের কথা অনেকেই জানেন৷ কিন্তু আরেক মুসলিম গোষ্ঠীর প্রতি সরকারের সুনজর আছে৷

গিনেসে বাংলাদেশের কয়েকটি রেকর্ড

‘গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’-এর ওয়েবসাইটে এসব রেকর্ডের কথা আছে৷ গিনেস বলছে, ওয়েবসাইটে যে রেকর্ডগুলোর তালিকা আছে, সেগুলো সব হালনাগাদ৷

Bangladesh | Textilarbeiter protestieren für Mindestlohn (picture-alliance/Pacific Press/ Md. M. Hasan)

সবচেয়ে পাতলা দেশ

রাষ্ট্রতো আর পাতলা হতে পারে না, পাতলা হতে পারে তার মানুষ৷ সেই হিসেবে ২০১০ সালে বিশ্বের ‘সবচেয়ে পাতলা দেশ’ হিসেবে বাংলাদেশের নাম ওঠে গিনেস বইয়ে৷ সেই সময় মেয়েদের গড় বিএমআই (বডি ম্যাস ইনডেক্স) ছিল ২০.৫, আর পুরুষদের ২০.৪৷

Hagel, Hagelkorn USA Süd Dakota 2010 Rekordhagel (NWS Aberdeen/public domain)

সবচেয়ে ভারি শিল

১৯৮৬ সালের ১৪ এপ্রিল গোপালগঞ্জে শিলাবৃষ্টি হয়েছিল৷ সেই সময় যে শিল পড়েছিল তার কোনো কোনোটির ওজন ছিল প্রায় এক কেজি৷ ঐ দিন ৯২ জন নিহত হয়েছিলেন৷

Screenshot: www.guinnessworldrecords.com - Weltrekord zu den Meisten verheihrateten Geschwistern zwischen zwei Familien (guinnessworldrecords.com)

পাঁচ ভাই বিয়ে করেন পাঁচ বোনকে

১৯৭৭ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে নরেন্দ্র নাথ ও তারামনি রায় দম্পতির পাঁচ মেয়ের সঙ্গে তারাপদ কর্মকার ও খানা রানি রায় দম্পতির পাঁচ ছেলের বিয়ে সম্পন্ন হয়৷

Screenshot: www.prothom-alo.com - Weltrekord (prothom-alo.com)

ফুটবল শৈলী

রোলার স্কেটের উপর দাঁড়িয়ে মাথার উপর ফুটবল নিয়ে ২৭.৬৬ সেকেন্ডে ১০০ মিটার পার হয়েছেন আব্দুল হালিম৷ ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে এই নৈপুণ্য দেখান তিনি৷

Screenshot: www.guinnessworldrecords.com zu Weltrekorden (guinnessworldrecords.com/)

দীর্ঘতম মানববন্ধন

২০০৪ সালের ১১ ডিসেম্বর ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ একজন আরেকজনের হাত ধরে দাঁড়িয়েছিলেন৷ সরকারের বিরুদ্ধে ‘অনাস্থা’ প্রকাশের এই কর্মসূচির আয়োজনে ছিল আওয়ামী লীগ৷ টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত এই মানববন্ধন ১,০৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ছিল৷

Bangladesch Hochwasser in Dhaka (picture alliance/Zumapress.com)

বন্যায় রেকর্ড সংখ্যক গৃহহীন মানুষ

১৯৯৮ সালে বাংলাদেশের প্রায় ৫৭ শতাংশ এলাকা বন্যা কবলিত হয়েছিল৷ সেই সময় প্রায় ২৫ মিলিয়ন মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছিল৷ ওপরের ছবিটি ২০১৫ সালের৷

Screenshot Guinness World Records (Guinness World Records)

সাইকেল চালিয়ে রেকর্ডবুকে

এক সারিতে একসঙ্গে ১,১৮৬ জন সাইকেল চালিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ঠাঁই পেয়েছে বাংলাদেশে সাইক্লিস্টদের অন্যতম বড় সংগঠন ‘বিডিসাইক্লিস্টস’৷ বিজয় দিবসে সংগঠনটি এই সাইকেল চালনার আয়োজন করেছিল৷

Bangladesh Eid al-Adha Festival (Reuters/M. P. Hossain)

জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি

গিনেস বলছে, ২০১০ সালে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ২২ লক্ষ ২১ হাজার৷ দেশটির আয়তন ৫৫ হাজার ৬০০ বর্গকিলোমিটার৷ সেই হিসেবে বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করেন ২,৯১৮ জন৷

Bangladesch singen für Guinness in Dhaka Nationalhymne (Reuters)

লাখো কন্ঠে জাতীয় সংগীত

২০১৪ সালের ২৬শে মার্চ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সহায়তায় লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা গাওয়ার ১৩ দিন পর গিনেসের রেকর্ডবুকে জায়গা হয়৷ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ঢোকার সময় স্বয়ংক্রিয় যান্ত্রিক গণনা অনুসারে লোক হয়েছিল ২ লাখ ৫৪ হাজার ৬৮১ জন৷ এতেই আগের বছরের ৬ই মে ভারতে সাহারা গ্রুপের আয়োজনে এক লাখ ২২ হাজার লোকের একসঙ্গে জাতীয় সংগীত গাওয়ার রেকর্ডটি ভেঙে নতুন বিশ্বরেকর্ড হয়৷

মহেঞ্জোদারোয় যেসব সুবিধা ছিল তা আজও নেই পাকিস্তানের অনেক শহরে

কেমন আছে মহেঞ্জোদারো?

বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন শহর ছিল মহেঞ্জোদারো৷ তবে সেখানে যেসব সুবিধা ছিল তা আজও নেই পাকিস্তানের অনেক শহরে৷

Pakistan antike Stadt Mohenjo Daro (Getty Images/AFP/A. Hassan)

পাঁচ হাজার বছর আগে

খ্রিষ্টপূর্ব তিন হাজার বছর আগে ইন্ডাস উপত্যকায় সভ্যতা গড়ে উঠেছিল৷ বর্তমান ভারত ও পাকিস্তানের কিছু অংশ তখন সেই সভ্যতার অংশ ছিল৷ মহেঞ্জোদারো ছিল ঐ সভ্যতার সবচেয়ে বড় ও আধুনিক শহর৷ বর্তমান পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে ছিল এর অবস্থান৷

Pakistan antike Stadt Mohenjo Daro (Getty Images/AFP/A. Hassan)

আন্তর্জাতিক পরিচিতি নেই

মিশরীয় সভ্যতা সম্পর্কে বিশ্বের অনেকেই জানলেও মহেঞ্জোদারোকে কেউ চেনে না৷ জার্মান গবেষক মিশায়েল ইয়ানসেন এমনটিই মনে করেন৷ সম্প্রতি তিনি একদল বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগ দিয়ে ‘ফ্রেন্ডস অফ মহেঞ্জোদারো’ গড়ে তুলেছেন৷ মহেঞ্জোদারোকে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত করে তোলা ও ইন্ডাস সভ্যতার হঠাৎ করে হারিয়ে যাওয়ার কারণ খুঁজতে আগ্রহী তাঁরা৷

Pakistan antike Stadt Mohenjo Daro (Getty Images/AFP/A. Hassan)

ধ্বংসস্তূপই সম্বল

ইয়ানসেন ও তাঁর দল মনে করছেন, বর্তমানে থাকা মহেঞ্জোদারোর ধ্বংসস্তূপগুলো তাঁদের লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে৷ তাই এগুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা৷

Pakistan antike Stadt Mohenjo Daro (Getty Images/AFP/A. Hassan)

আবহাওয়া, লবণাক্ততা

ইয়ানসেন বলেন, গ্রীষ্মের সময় মহেঞ্জোদারোর তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রি পর্যন্ত ওঠে, যা ধ্বংসস্তূপগুলোর জন্য ক্ষতিকর৷ তাছাড়া ভূগর্ভের পানি বেশি লবণাক্ত হওয়াও সেগুলোর জন্য ভালো নয়৷

Pakistan antike Stadt Mohenjo Daro (Getty Images/AFP/A. Hassan)

আছে জঙ্গি সমস্যা

তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস যেমন সিরিয়ার পালমিরায় ঐচিহাসিক ও মূল্যবান সব স্থাপনা ধ্বংস করেছে, তেমন পাকিস্তানেও একটি ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠীর কারণে মহেঞ্জোদারোর ধ্বংসস্তূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷

Pakistan antike Stadt Mohenjo Daro (Getty Images/AFP/A. Hassan)

পর্যটকদের সচেতনতার অভাব

সেখানে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা মহেঞ্জোদারোর ঐতিহাসিক মূল্য সম্পর্কে সচেতন নন৷ তাই তাঁরা সেখানে গিয়ে কুয়ায় ময়লা ফেলেন৷ আর ধ্বংসস্তূপগুলোতে এমনভাবে ওঠানামা করেন, যা ঠিক নয়৷

Pakistan antike Stadt Mohenjo Daro (Getty Images/AFP/A. Hassan)

পুলিশের কাণ্ড

২০১৪ সালে পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার অংশ হিসেবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শত শত মানুষ মহেঞ্জোদারোর বর্তমান স্থাপনায় উপস্থিত হয়েছিলেন৷ সেখানে নিরাপত্তা দিতে উপস্থিত হওয়া পুলিশ সদস্যরা সেখানকার প্রধান স্তূপার শীর্ষে উঠেছিলেন৷ ঘটনাটি সেই সময় বেশ আলোচিত হয়েছিল৷ সাধারণ দর্শকরাও ঐ অনুষ্ঠানস্থলে নেচে-গেয়ে, আতশবাজি পুড়িয়ে, লেজার রশ্মির খেলা খেলে ঐতিহাসিক স্থাপনার ক্ষতি করেছেন৷

Pakistan antike Stadt Mohenjo Daro (Getty Images/AFP/A. Hassan)

খননকাজ

এখন পর্যন্ত মহেঞ্জোদারোর একটি ছোট অংশে খননকাজ চালানো হয়েছে৷ এতে পাওয়া যাওয়া মাটি ও ধাতুর তৈরি সিলমোহর, মুদ্রা, মূল্যবান পাথর, সোনা ও তামা দিয়ে তৈরি অলংকার, খেলনা, বাঁশি ইত্যাদি ইন্ডাস সভ্যতার মানুষের সুখের দিনের কথা মনে করিয়ে দেয়৷

Pakistan antike Stadt Mohenjo Daro (Getty Images/AFP/A. Hassan)

জাদুঘরে প্রদর্শন

মহেঞ্জোদারো বর্তমানে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ৷ খননকাজের মাধ্যমে পাওয়া বিভিন্ন জিনিসের দেখা পাওয়া যায় সেখানে নির্মাণ করা একটি জাদুঘরে৷

Pakistan antike Stadt Mohenjo Daro (Getty Images/AFP/A. Hassan)

হস্তলিপির ডিজিটালাইজেশন

মহেঞ্জোদারো বিষয়ক পাকিস্তানের প্রধান উপদেষ্টা ড. কালিম লাসারি বলছেন, তাঁরা ভবিষ্যতে ইন্ডাস হস্তলিপি ‘ডিজিটালাইজড’ করার পরিকল্পনা করছেন৷ তিনি আশা করছেন, এভাবে অনলাইনে হস্তলিপি দেখতে পাওয়ার সুযোগ মহেঞ্জোদারো সম্পর্কে বিশ্বের মানুষের আগ্রহ বাড়াবে৷

Pakistan antike Stadt Mohenjo Daro (Getty Images/AFP/A. Hassan)

ভাবমূর্তির সংকট

তবে ড. লাসারি বলেন, মহেঞ্জোদারোকে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত করে তোলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা বোধ হয় পাকিস্তানের ভাবমূর্তি সংকট৷ খারাপ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে বিদেশিরা পাকিস্তানে যেতে ভয় পান বলে মনে করেন তিনি৷

ভারতকে ছাড়িয়ে সবার ওপরে সৌদি আরব, পিছিয়েছে চীন ও পাকিস্থান

স্টকহোমের আন্তর্জাতিক শান্তি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান (সিপ্রি)-র প্রতিবেদনে শঙ্কা জাগানো ইঙ্গিত৷ সারা বিশ্বে অস্ত্রের ক্রয়-বিক্রয় বেড়েই চলেছে৷ চলুন দেখা যাক ২০১৫ সালে অস্ত্র খাতে ব্যয়ে কোন দেশ কোন অবস্থানে৷

Jemen Saudi Arabien Grenze Panzer Archiv

অস্ত্র কেনায় ২০১৫-র সেরা সৌদি আরব

মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে গণতন্ত্র নেই৷ মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে নিয়মিত৷ তবে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে সৌদি আরব সরকারের উদ্যোগ এবং আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই৷ অস্ত্র ক্রয়ে ৩ হাজার ১৬১ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে ২০১৫ সালের শীর্ষ অস্ত্র আমদানিকারক দেশ হয়ে গেছে সৌদি আরব৷ ২০১৪ সালে এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারত, সৌদি আরব ছিল দ্বিতীয় স্থানে৷

Indien Flugzeugträger Marine

সামরিক শক্তি বাড়িয়েই চলেছে ভারত

বরাবরের মতো এখনো রাশিয়ার কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি অস্ত্র ক্রয় করে ভারত৷ সিপ্রি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে সবচেয়ে বড় অস্ত্র আমদানিকারক দেশও ভারত৷ ২০১৫ সালেও এই খাতে ৩ হাজার ৭৮ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে তারা৷ ২০১৪ সালে ৩ হাজার ৪৮৭ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে এক বছরের শীর্ষ অস্ত্র আমদানিকারক দেশের তালিকায় সবার ওপরে ছিল ভারত৷ এবার শীর্ষে উঠে এসেছে সৌদি আরব৷

US F-35 Militärflugzeug 2011

অবাক করেছে অস্ট্রেলিয়া

আগের বছরের শীর্ষ অস্ত্র আমদানিকারকদের তালিকায় অষ্টম স্থানে ছিল অস্ট্রেলিয়া৷ কিন্তু ২০১৫ সালে ১ হাজার ৫৭৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে তারা৷

Schiff Lutfallah II Verdacht auf Waffenlieferung nach Syrien

চতুর্থ মিশর

মিশরও দীর্ঘদিন ধরে অশান্ত৷ সে দেশে উল্লেখযোগ্য হারে অস্ত্র ক্রয়ও বাড়ছে৷ ২০১৫ সালে অস্ত্র ক্রয়ে ১ হাজার ৪৭৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করে সে বছরের সর্বোচ্চ অস্ত্র আমদানিকারক দেশগুলোর তালিকায় চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে মিশর৷ এক বছর আগে ২২তম স্থানে তারা!

Frankreich Luftwaffe Kampfjets

পঞ্চম স্থানে সংযুক্ত আরব আমিরাত!

সৌদি আরব, ভারত, অস্ট্রেলিয়া আর ফ্রান্সের পরই আছে সংযুক্ত আরব আমিরাত৷ ২০১৫ সালে অস্ত্র ক্রয়ে তাদের মোট ব্যয় ১ হাজার ২৮৯ মিলিয়ন ডলার৷ ব্যয় বাড়িয়ে এক বছরে ১১ তম স্থান থেকে এক লাফে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে তারা৷

Irak Tikrit Offensive gegen IS

ইরাকও আছে অস্ত্র ক্রয়ের প্রতিযোগিতায়

ইরাকের মানুষ রক্তপাতহীন একটি দিন কবে পাবে কে জানে! এখন যে যুদ্ধ চলছে সেখানে ইরাকি সেনাবাহিনীর প্রতিপক্ষ সুন্নি মুসলমানদের তথাকথিত জঙ্গি সংগঠন আইএস৷ ফলে অস্ত্র ক্রয় আরো বেড়েছে৷ ২০১৫ সালেই এই খাতে মোট ১ হাজার ২১৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে ইরাক৷ ফলে ২০১৪ সালের শীর্ষ আমদানিকারক দেশগুলোর তালিকায় ১৫তম স্থান পাওয়া ইরাক ২০১৫ সালে ৯ ধাপ এগিয়ে উঠে এসেছে ষষ্ঠ স্থানে৷

China Russland gemeinsame Manöver

চীন পিছিয়েছে

২০১৪ সালে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র আমদানি করা দেশগুলোর তালিকার চতুর্থ স্থানে ছিল চীন৷ পরের বছর ১ হাজার ২১৪ মিলিয়ন ব্যয় করেও সপ্তম স্থানে নেমে গেছে তারা৷ এটা অবশ্য শুধু এক বছরে অস্ত্র আমদানিতে মোট ব্যয়ের হিসেব৷ চীন শুধু অস্ত্র আমদানি করে না, বিক্রিও করে৷ শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার পরই তাদের স্থান৷

Russisches U-Boot Kilo

ভিয়েতনামও আছে

২০১৪ সালে এক বছরে অস্ত্রখাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করা দেশগুলোর তালিকায় সপ্তম স্থানে ছিল ভিয়েতনাম৷ উন্নয়নশীল এই দেশটি ২০১৫ সালে ৮৭০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেও এক ধাপ পিছিয়েছে৷

Griechenland Symbolbild Einigung Hilfspaket

অস্ত্র ক্রয়ে সমস্যা নেই গ্রিসের!

চরম অর্থনৈতিক সংকট চলছে গ্রিসে৷ অন্যদিকে অস্ত্র ক্রয়ে ব্যয় বাড়ানোর প্রবণতাও ভয়ংকর রূপ নিয়েছে৷ ২০১৫ সালে অস্ত্র ক্রয়ে ৭৬২ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে গ্রিস৷ ফলে এক বছরে অস্ত্র খাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করা দেশগুলোর তালিকায় নবম স্থানে উঠে এসেছে তারা৷ আগের বছর ৩৩তম স্থানে ছিল গ্রিস৷

Nepal Erdbeben Hilfsgüter aus Pakistan

এক ধাপ পিছিয়েছে পাকিস্তান

২০১৫ সালে অস্ত্র ক্রয়ে মোট ৭৩৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে পাকিস্তান৷ বৈরি প্রতিবেশী দেশ ভারতের চেয়ে দু’হাজার মিলিয়নের চেয়েও কম ব্যয় করে তারা এখন তালিকার দশম স্থানে৷ ২০১৪ সালে নবম স্থানে ছিল পাকিস্তান৷

মূল্যবোধের অবক্ষয়ে আওয়ামী লীগের এমপিদের এমন ‘কীর্তি’

আওয়ামী লীগের সাবেক এক এমপি সততার জন্য সবার শ্রদ্ধা কুড়ালেন৷ কিন্তু তাঁর কথা যেন ভুলিয়ে দিচ্ছেন কয়েকজন বর্তমান এমপি৷ তাঁদের কেউ শিক্ষার্থীদের বলছেন খুলি উড়িয়ে দেয়ার কথা, কেউ অপমান করছেন নিজের শিক্ষককে৷

defaultফুটপাথে হকার বসানোকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল নারায়ণগঞ্জ

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া এলাকার সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউসুফের অর্থের অভাবে চিকিৎসা হচ্ছিল না৷ প্রায় বিনা চিকিৎসায় তিনি মরতে বসেছিলেন৷ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে৷ মো. ইউসুফ রাজনীতির কারণে বিয়েও করেননি৷ রাজনীতি অন্তপ্রাণ এই মানুষটি সারাজীবন রাজনীতি করে নিজের চিকিৎসার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করেননি৷ অথচ বর্তমান রাজনীতিকদের অনেকেই কোটিপতি৷ নির্বাচনের বছর চলছে৷ অথচ আওয়ামী লীগের যেসব এমপি সরকারকে বেকায়দায় ফেলছে, দলকে বেকায়দায় ফেলছে, তাদের ‘চিকিৎসার’ দায়িত্ব কে নেবে? বিশ্লেষকরা মনে করেন, দলীয় নেতা-কর্মীদের একটা অংশকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে এর মাশুল গুনতে হবে৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘একটা বড় ধরনের মূল্যবোধের অবক্ষয় আমরা লক্ষ্য করছি৷ আর এ কারণেই আগের সময়ের এমপিরা টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না৷ অন্যদিকে এখনকার এমপিদের অবস্থা তো আমরা দেখছিই৷’’ তাঁর মতে, ‘‘এই অবক্ষয় শুধু রাজনীতিবিদদেরই হয়েছে, এমন নয়৷ এটা সমাজের সব পেশার মানুষেরই হয়েছে৷ মো. ইউসুফ আদর্শিক রাজনীতির উদাহরণ৷ আর এখনকার এমপিরা মূল্যবোধের অবক্ষয়ের পর এমপিদের উদাহরণ৷’’

অডিও শুনুন01:54

একটা বড় ধরনের মূল্যবোধের অবক্ষয় আমরা লক্ষ্য করছি: হাফিজুর রহমান কার্জন

নারায়নগঞ্জে ফুটপাথে হকার বসানো নিয়ে মেয়র আইভি রহমানের সঙ্গে সরাসরি বিরোধে জড়িয়েছেন এমপি শামীম ওসমান৷ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রধান সড়কগুলো থেকে হকার উচ্ছেদ করা হচ্ছিল৷ উচ্ছেদ করা হকারদের জন্য হলিডে মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে বিকল্প ব্যবস্থাও করা হয়েছিল৷ কিন্তু শামীম ওসমানের লোকজন উচ্ছেদকারীদের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে৷ একজন তো সরাসরি অস্ত্র নিয়ে মেয়র আইভি রহমানকে গুলি করতে যান বলে অভিযোগ৷

এর আগে আওয়ামী লীগের কক্সবাজার এলাকার এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল রামুতে একজন প্রবীণ শিককে লাঞ্ছিত করেছেন৷ সুনীল কুমার শর্মা নামের ওই শিক্ষককে জামার কলার ধরে গলা ধাক্কাও দেন তিনি৷ স্থানীয়রা বলছেন, সুনীল শর্মা ছিলেন এমপি সাইমুম সরওয়ার ও তার ভাই সোহেল সরওয়ার কাজলের শিক্ষক৷ এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর ছেলে ঢাকায় একটি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক৷ ওই সংগঠন সাইমুমের পছন্দ মতো চলছে না৷ সাইমুমের কথা শোনেননি সুলীল শর্মার ছেলে সুজন শর্মা৷ ছেলেকে হুমকি দিতে এসে তার বাবাকে লাঞ্ছিত করলেন সাইমুম৷ সাইমুমের বড় ভাই রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেলও প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘তার ভাইয়ের উচিৎ শিক্ষকের কাছে মাফ চাওয়া৷’’

এর আগেও কক্সবাজার এলাকার এমপি বদি সরকারী কর্মকর্তাদের পিটিয়ে আলোচনায় আসেন৷ তার বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মদত দেয়ার অভিযোগও এসেছে খোদ সরকারী তরফ থেকে৷ টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের এক নেতা হত্যার দায়ে আরেক এমপি আমানুর রহমান তো জেলেই আছেন৷ এমপিদের বিরুদ্ধে এমন অজস্র অভিযোগ৷ এর বাইরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠছে অনেক৷

অডিও শুনুন01:38

যেসব এমপির বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আছে, তারা আগামীতে মনোনয়ন পাবেন না: হানিফ

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র মাহবুব-উল-আলম হানিফ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যেসব এমপির বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আছে, তারা আগামীতে মনোনয়ন পাবেন না৷ এটা নিশ্চিত৷ আর একটা দেশে তো কিছু ঘটনা ঘটতেই পারে৷ তবে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে কি-না সেটা মূল কথা৷ কোনো ঘটনায়ই ছাড় দেয়া হচ্ছে না৷ এমনকি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী হলেও না৷ নারায়নগঞ্জের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ প্রশাসনকে বলা হয়েছে, দোষী যে-ই হোক, তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে৷ ইতিমধ্যে কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে৷ অন্যরাও গ্রেফতার হবে৷ এখানে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই৷’’

গত এক সপ্তাহ আগে এম এইচ শমরিতা মেডিকেল কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি গালাগালি করে আলোচনায় এসেছেন সাবেক এমপি হাজি এম মকবুল হোসেন৷ মেডিকেল কলেজটির মালিক তিনি৷ ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধি ও বাড়তি ফি আদায় বন্ধসহ কয়েকটি দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থীরা৷ সেখানে যান হাজি মকবুল৷ এরপর এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং খুলি উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন৷

অডিও শুনুন02:07

‘এখন রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করেন নিজের জন্য’

পুরনো একটি বিপণী বিতান ভেঙে প্রকাশ্যে জায়গা-জমি জবর দখলের অভিযোগ উঠে নওগাঁর সাপাহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলীর বিরুদ্ধে৷ সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের উপর হামলা হামলা চালিয়ে মারপিট করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় শাহজাহানের ক্যাডাররা৷

সাম্প্রতিক সময়ে আরো কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার নামও সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে অনাকাঙ্খিত ঘটনার কারণে৷

এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে মানবাধিকার কর্মী নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন ভর করেছে৷ রাজনীতি এখন আর রাজনীতিবিদদের হাতে নেই৷ আগে মানুষ রাজনীতি করত মানুষের জন্য৷ এখন রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করেন নিজের জন্য৷ এখন যারা এমপি, তাদের অধিকাংশই কোটি টাকার মালিক বা কোটি টাকা তিনি অপচয় করেন৷ এখন এই ধরনের রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে আমরা কি আশা করতে পারি? এ কারণে সম্প্রতি যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেটা তো ঘটবেই৷’’

ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতির প্রশ্নপত্র ফাঁস সম্পর্কে একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়ে ঘুরছে ইন্টারনেট জগতে

বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতির প্রশ্নপত্র ফাঁস সম্পর্কে একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়ে ঘুরছে ইন্টারনেট জগতে৷

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি নিউজ তাদের এক টকশো’র শিরোনাম করেছিল ‘ছাত্র লীগের ৭০ বছর’৷ গত ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই টক শো’তে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবং ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগও অংশ নেন৷

আলোচনার এক পর্যায়ে অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক নবনীতা চোধুরী এক দর্শকের প্রশ্ন তুলে ধরে সাইফুর রহমান সোহাগকে বলেন, ‘‘ছাত্রলীগের ভালো কাজ তো অনেক প্রশংসার দাবি রাখেই, আবার অনেক আঘাত পাই, যখন শুনি এইছাত্রলীগের কেউ আবার খারাপ কাজে সেঞ্চুরি করে,বিশ্বজিতের মতো নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে, প্রশ্নপত্রা ফাঁসের মতো কাজে নির্দ্বিধায় জড়িয়ে পড়ে৷ তাহলে ছাত্রলীগ থেকে কী শেখার আছে?”

উত্তরে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘‘যেখানে বাংলাদেশের কোথাও প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো ঘটনাই ঘটে না, সেখানে কিভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত, বলেন?” ছাত্রলীগ সভাপতির এরকম উত্তরে অনেকটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন সঞ্চালক৷

ডিবিসি নিউজে টকশো’টি প্রচার হওয়ার পরপরই ছাত্রলীগ সভাপতির ওই বক্তব্যের অংশটুকুর ভিডিও অনেকে ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেন৷

বাংলাদেশে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা নিয়মিতই ঘটছে৷ আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিষয়টি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে৷

২২ বছর আগের যে ‘জলসা’ এখন ভাইরাল

মেয়র আনিসুল হক চলে গেছেন না ফেরার দেশে৷ কিন্তু রেখে গেছেন কিছু অনবদ্য কাজ৷ বাংলাদেশ টেলিভিশনে আশি থেকে নব্বইয়ের দশকে তাঁর উপস্থাপনায় বেশ কিছু ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠান আজও মনে রেখেছে মানুষ৷ তেমনই একটি অনুষ্ঠান ‘জলসা’৷

বিটিভিতে জলসা

আনিসুল হকের মৃত্যুর মাত্র কয়েক মাস আগে বিটিভি-র এই অনুষ্ঠানটি অনেকেই ফেসবুকে শেয়ার করেছেন৷ মৃত্যুর পর নতুন করে অনেকেই শেয়ার করছেন এটি৷

১৯৯৫ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর এটি বিটিভিতে সম্প্রচার হয়৷ চলতি বছরের মে মাসে ইউটিউবে পোস্ট করা হয়েছে ভিডিওটি৷ এ পর্যন্ত ২ লাখেরও বেশি বার দেখা হয়েছে৷ ২২ বছরের পুরোনো একটা ভিডিও কেন এতটা জনপ্রিয় জানতে হলে আপনাকে পুরো অনুষ্ঠানটি দেখতে হবে৷ ইউটিউবে ভিডিওর নীচে চারশ’টিরও বেশি মন্তব্যে সবাই জানিয়েছেন নিজেদের ভালো লাগার কথা, অনেকের শৈশবের কথা৷

তার মধ্যে কয়েকটি এখানে তুলে ধরা হলো:

মাজহারুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘কি প্রাণবন্ত অনুষ্ঠান তখন একটি মাত্র চ্যানেল বিটিভিতে প্রচারিত হত এখন ভাবা যায়? এই পোস্টটি আমাকে ১৯৮০ সালে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে৷ নাটক, সিনেমা, ছায়াছন্দ, গানের অনুষ্ঠান, টারজান, টম অ্যান্ড জেরি, কোনটা রেখে কোনটার কথা বলবো৷ এক মঙ্গলবারে এইসব দিন-রাত্রি তো পরের মঙ্গলবারে ঢাকায় থাকি, প্রতি মাসের শেষ বৃহস্পতিবারে সিনেমা কত কিছু মনে পড়ছে৷ আমরা কি আমাদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে পেরেছি? ভাবা দরকার৷ সরকারের উচিত প্রত্যেক টিভি চ্যানেলকে বিটিভিতে প্রচারিত আগের অনুষ্ঠানগুলোকে পুনরায় প্রচারে বাধ্য করা৷”

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)-র মেয়র আনিসুল হক বৃহস্পতিবার রাতে লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন৷ তাঁর মৃত্যুতে দেশের প্রতিটি অঙ্গণের মানুষ শোক জানিয়েছেন৷ (01.12.2017)

 

শাহজাহান চৌধুরী লিখেছেন, ‘‘অসাধারণ একটি অনুষ্ঠান৷ ২২ বছর আগে সম্প্রচারের দিনই অনুষ্ঠানটি আমার দেখার সুযোগ হয়েছিল৷ আশি এবং নব্বই দশক ছিল ব্যান্ড সংগীতের গোল্ডেন টাইম৷ সে সময়কার রিলিজ হওয়া প্রতিটি ব্যান্ড সংগীত ছিল সকল উঠতি তরুণ-তরুণী এবং যুবক-যুবতীদের মুখে মুখে৷ আনিসুল হকের উপস্থাপনায় ‘এখনই’ ঈদে ‘আনন্দ মেলা’ দেখেছিলাম৷ এত বছর পরে ইউটিউবে অনুষ্ঠানটি আবারো দেখে, অনেক গুলো বিষয় মিলাতে পারি না! অনুষ্ঠানটিতে সবার সৌজন্যবোধ, সংযমী কথা, একে অপরে প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং সবার কথা বলার স্টাইল, এ সবের সাথে কি এখনকার কোন মিল আছে? আমরা আধুনিক এবং উন্নত হতে হতে, নিজেদেকেই ভুলে গেছি বলে মনে হয়! ”

নাজির ইকবাল লিখেছেন, ‘‘২২ বছর পে‌রি‌য়ে গে‌ছে! ম‌নে হয় এই তো সে‌দিন ! তখন ক্লাস নাই‌নে প‌ড়ি! রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার ক‌ণ্ঠে সোল‌সের গান, পার্থ বড়ুয়ার শচীনকর্তার গান, নকিব খা‌নের রবীন্দ্রসংগীত! আহা দিনগুলা কোথায় হারা‌লো!”

মৃন্ময় নিয়াজ লিখেছেন, ‘‘এই অনুষ্ঠানটা হচ্ছে বাংলা সংগীত ও সাংস্কৃতিক জগতের এক অসামান্য ভিডিও দলিল, দেশের সেরা সব বাঘেরা এক স্থানে, তাদের সাথে হবু বাঘের দল৷”

প্রায় ২২ বছর আগের একটা অনুষ্ঠান আবারও দেখছে লাখো মানুষ৷ এই অনুষ্ঠানের ভিন্নতা এবং উপযোগিতা যে এখনো শেষ হয়ে যায়নি ‘জলসা’ যেন সেটাই মনে করিয়ে দিচ্ছে৷

সংসদে গুম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কী ইঙ্গিত দেয়?

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেছেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, অন্য দেশেও গুম হচ্ছে৷ ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে গুমের একটি হিসেব তুলে ধরে সেখানকার অবস্থা আরো ভয়াবহ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি৷ তাঁর এই বক্তব্য কী ইঙ্গিত দেয়?

Bangladesh Sheikh Hasina Regierungschefin (Oli Scarff/Getty Images)

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ সম্প্রতি কয়েকজন ব্যক্তির নিখোঁজ হওয়া ও মানুষের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ করে মানুষ গুম হচ্ছে, নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে৷ মুক্তিপণ আদায় করা হচ্ছে৷”

তিনি আরো বলেন, ‘‘গত ৫ বছরে নিখোঁজ হয়েছে ৫১৯ জন মানুষ৷ তাঁরা কিভাবে নিখোঁজ হলো? ক’দিন আগে অনিরুদ্ধ রায় ফিরে এলো৷ সে কোথায় ছিল? কে তাদের নিয়ে গেল? অন্যরা ফিরলো না৷ তাহলে বোঝা যাচ্ছে, ঘরে বসে মানুষ খুন হচ্ছে৷ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে৷”

অডিও শুনুন02:57

‘‘অতীতে গুমকে সরাসরি অস্বীকার করা হতো’’

এর প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব, এটা অস্বীকার করছি না৷ বিরোধীদলীয় নেতা গুমের কথা বলেছেন, এই গুম তো বহুভাবেই হচ্ছে৷ অনেকে ফেরতও আসছে৷ কিন্তু ফেরত আসা বা খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে বড় করে খবর হয় না৷” তিনি বলেন,  ‘‘কী কারণে হচ্ছে, কোথায় হচ্ছে৷ এটা কি শুধু বাংলাদেশে? ২০০৯ সালের একটি হিসাবে ব্রিটেনে ২ লাখ ৭৫ হাজার ব্রিটিশ নাগরিক গুম হয়ে গেল৷ তার মধ্যে ২০ হাজারের কোনো হদিসই পাওয়া গেল না৷ অ্যামেরিকার অবস্থা আরও ভয়াবহ৷ তাদের সব কিছু তো আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন, তারপরও সেই দেশে এত লোক গুম হয়, তার খোঁজ পাওয়া যায় না৷ ৫৪ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষের বাস৷ এইটুকু ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে এত মানুষের অবস্থান৷ অথচ এই সকল উন্নত দেশগুলোর জনসংখ্যা কত? সেই তুলনায় আমরা অবস্থা অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণে রেখে যখন কোনো ঘটনা ঘটছে সঙ্গে সঙ্গে খোঁজ নিচ্ছি৷”

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘আমাদের একজন স্বনামধন্য আঁতেল ‘গুম’ হয়ে গেলেন৷ পরে দেখা গেল উনি গুম হননি৷ উনি নিজে নিজেই খুলনায় গেলেন৷ পরে তাঁকে খুঁজে পাওয়া গেল৷ এর দোষটা আমাদের৷ এ ধরনের আরও অনেক ঘটনা তো ঘটে যাচ্ছে৷ আমি তার নামধাম বলতে চাই না৷”

সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ফরহাদ মজহারের পর গত আড়াই মাসে ১০টি নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে৷ ফরহাদ মজহার অবশ্য নিখোঁজ হওয়ার ১৬ ঘন্টার মধ্যে খুলনা থেকে উদ্ধার হয়েছেন৷  তবে তিনি উদ্ধার হওয়ার পর সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে এখন পর্যন্ত কোনো কথা বলেননি৷ শুধু পুলিশের কাছে এবং আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন৷

মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সালের জুন  পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে নিখোঁজ বা অপহরণের শিকার হয়েছেন ২৮৪ জন৷ তাদের মধ্যে মৃতদেহ উদ্ধার হয় ৪৪ জন ব্যক্তির৷ নিখোঁজের পর গ্রেপ্তার দেখানো হয় ৩৬ জনকে এবং পরিবারের কাছে বিভিন্নভাবে ফিরে আসেন ২৭ জন৷ তবে এখনও ১৭৭ জনের কী অবস্থা তা জানা যাচ্ছে না৷ তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা পরিবার বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ বলতে পারছেন না৷

আসক-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এরমধ্যে অনেককেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেয় হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ এমনকি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাকেও অপহরণের অভিযোগ আছে৷ আর প্রতিটি অপহরণ ও নিখোঁজের ঘটনার পরই পরিবারের পক্ষ থেকে সহায়তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিতে গেলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কোনও উত্তর দিতে পারে না৷

বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ২০১৩ সাল থেকে শত শত মানুষকে বেআইনিভাবে গোপন স্থানে আটকে রেখেছে বলে কিছু দিন আগেই অভিযোগ তোলে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও গুমের অভিযোগ করে আসছে৷

সম্প্রতি নিখোঁজ ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী ফিরে এলেও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক মোবাশ্বার হাসান সিজার ও সাংবাদিক উৎপল দাশের সন্ধান এখনও মেলেনি৷

আসক-এর সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং মানবাধিকারকর্মী নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা সত্য যে উন্নত অনেক দেশেই গুমের ঘটনা ঘটে৷ কিন্তু তার সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য আছে৷ ওইসব দেশে ঘটনা ঘটার পর রাষ্ট্র অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসে৷ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার বিচার ও ক্ষতিপুরণ পায়৷ কিন্তু বাংলাদেশে দৃশ্যত গুমের কোনো কার্যকর তদন্ত হয় না৷ সংসদে যদি বিষয়টি নিয়ে ধৈর্য্য সহকারে আলোচনা হতো, প্রস্তাব উত্থাপন হতো, সেটি বরং সাধারণ মানুষের জন্য, আমার জন্য অনেক উপকারে আসতো৷ যাঁরা গুমের শিকার হয়েছেন, তাঁদের পরিবার আশ্বস্ত হতে পারতো যে, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এক ধরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ হয়তো তাঁরা তাঁদের নিখোঁজ স্বজনদের ব্যাপারে জানতে পারবেন৷ জীবিত না হলেও তাঁদের কবর কোথায় তা জানতে পারবেন৷”

অডিও শুনুন03:54

‘‘এটা সত্য যে উন্নত অনেক দেশেই গুমের ঘটনা ঘটে’’

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘অপহরণের পর যাঁরা ফিরে এসেছেন এবং অপহৃতদের স্বজনদের সঙ্গে আমরা কথা বলে জেনেছি, যারা গুম করে বা অপহরণ করে নিয়ে যায়, তারা স্মার্ট, দক্ষ, প্রশিক্ষিত এবং তাদের শারীরিক গঠন শক্তিশালী৷ আর অপহৃতদের এমন জায়গায় রাখা হয়, যেখানে জনসাধারণের প্রবেশ নিষেধ৷”

নূর খান আরো বলেন, ‘‘রাষ্ট্র এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে না, যা প্রশ্ন তৈরি করে৷ নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনার পর এটা আশঙ্কা করা যায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো একটি অংশ এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে৷ অথবা যারা করছে তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়েও শক্তিশালী৷”

এদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘অতীতে গুমকে সরাসরি অস্বীকার করা হতো৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে স্বীকার করেছেন যে, গুম হচ্ছে৷ সেটার ভয়াবহতা কোন মাত্রায় তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে৷ প্রধানমন্ত্রী  বিষয়টি এড়িয়ে যাননি৷ বরং কোথায় গলদ আছে তা চিহ্নিত করার কথা বলেছেন৷ তিনি আরো বলেছেন মাথায় পচন ধরেনি৷ তাই শরীরের অন্য কোনো অংশে যদি কোনো ক্ষতের সৃষ্টি হয় তা সারাতে তিনি ব্যবস্থা নেবেন এই আশা আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে করতে পারি৷”

ড. মিজান বলেন, ‘‘গুমের বিচার এখন আর এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নাই৷ জাতিসংঘে গৃহীত গুম বিষয়ক সনদে এটাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং মানবতাবিরোথী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে৷ তাই বিশ্বের যে কোনো দেশ অন্য কোনো গুমের ঘটনার বিচার করতে পারে৷ এ দেশে যদি বিচার না হয়, তাহলে এই বিচার বিশ্বের অন্যকোনো দেশেও হতে পারে৷ গুম একটি জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ৷ আর সেটা এখন আন্তর্জাতিকভাব স্বীকৃত৷”