Content is Continuing from here …
সারা বিশ্বে রয়েছে মোট ৪০ রকমের কফি ৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, কফি পান করা খুবই স্বাস্থ্যকর৷ তবে কফি পান করার কিছু নিয়মও রয়েছে ৷ যেমন কফির সাথে দুধ এবং চিনি মেশালে কফির উপকারিতা কমে যায়৷ ঠিক যেমনটা হয়ে থাকে চায়ের ক্ষেত্রে৷ তাই কালো কফি পান করাই সকলের জন্য উত্তম ৷
DW [dw.com]
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী যত মিষ্টি !
মিষ্টির ঐতিহ্য বাংলাদেশে বহুকালের৷ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু ও ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্নের সমাহার৷ ছবিঘরে দেখুন তার কিছু নমুনা৷
চীনে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মুসলমানের বাস৷
চীনে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মুসলমানের বাস৷ উইগুর মুসলিমদের উপর নিপীড়নের কথা অনেকেই জানেন৷ কিন্তু আরেক মুসলিম গোষ্ঠীর প্রতি সরকারের সুনজর আছে৷
গিনেসে বাংলাদেশের কয়েকটি রেকর্ড
‘গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’-এর ওয়েবসাইটে এসব রেকর্ডের কথা আছে৷ গিনেস বলছে, ওয়েবসাইটে যে রেকর্ডগুলোর তালিকা আছে, সেগুলো সব হালনাগাদ৷
মহেঞ্জোদারোয় যেসব সুবিধা ছিল তা আজও নেই পাকিস্তানের অনেক শহরে
কেমন আছে মহেঞ্জোদারো?
বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন শহর ছিল মহেঞ্জোদারো৷ তবে সেখানে যেসব সুবিধা ছিল তা আজও নেই পাকিস্তানের অনেক শহরে৷
ভারতকে ছাড়িয়ে সবার ওপরে সৌদি আরব, পিছিয়েছে চীন ও পাকিস্থান
স্টকহোমের আন্তর্জাতিক শান্তি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান (সিপ্রি)-র প্রতিবেদনে শঙ্কা জাগানো ইঙ্গিত৷ সারা বিশ্বে অস্ত্রের ক্রয়-বিক্রয় বেড়েই চলেছে৷ চলুন দেখা যাক ২০১৫ সালে অস্ত্র খাতে ব্যয়ে কোন দেশ কোন অবস্থানে৷
মূল্যবোধের অবক্ষয়ে আওয়ামী লীগের এমপিদের এমন ‘কীর্তি’
আওয়ামী লীগের সাবেক এক এমপি সততার জন্য সবার শ্রদ্ধা কুড়ালেন৷ কিন্তু তাঁর কথা যেন ভুলিয়ে দিচ্ছেন কয়েকজন বর্তমান এমপি৷ তাঁদের কেউ শিক্ষার্থীদের বলছেন খুলি উড়িয়ে দেয়ার কথা, কেউ অপমান করছেন নিজের শিক্ষককে৷
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া এলাকার সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউসুফের অর্থের অভাবে চিকিৎসা হচ্ছিল না৷ প্রায় বিনা চিকিৎসায় তিনি মরতে বসেছিলেন৷ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে৷ মো. ইউসুফ রাজনীতির কারণে বিয়েও করেননি৷ রাজনীতি অন্তপ্রাণ এই মানুষটি সারাজীবন রাজনীতি করে নিজের চিকিৎসার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করেননি৷ অথচ বর্তমান রাজনীতিকদের অনেকেই কোটিপতি৷ নির্বাচনের বছর চলছে৷ অথচ আওয়ামী লীগের যেসব এমপি সরকারকে বেকায়দায় ফেলছে, দলকে বেকায়দায় ফেলছে, তাদের ‘চিকিৎসার’ দায়িত্ব কে নেবে? বিশ্লেষকরা মনে করেন, দলীয় নেতা-কর্মীদের একটা অংশকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে এর মাশুল গুনতে হবে৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘একটা বড় ধরনের মূল্যবোধের অবক্ষয় আমরা লক্ষ্য করছি৷ আর এ কারণেই আগের সময়ের এমপিরা টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না৷ অন্যদিকে এখনকার এমপিদের অবস্থা তো আমরা দেখছিই৷’’ তাঁর মতে, ‘‘এই অবক্ষয় শুধু রাজনীতিবিদদেরই হয়েছে, এমন নয়৷ এটা সমাজের সব পেশার মানুষেরই হয়েছে৷ মো. ইউসুফ আদর্শিক রাজনীতির উদাহরণ৷ আর এখনকার এমপিরা মূল্যবোধের অবক্ষয়ের পর এমপিদের উদাহরণ৷’’
নারায়নগঞ্জে ফুটপাথে হকার বসানো নিয়ে মেয়র আইভি রহমানের সঙ্গে সরাসরি বিরোধে জড়িয়েছেন এমপি শামীম ওসমান৷ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রধান সড়কগুলো থেকে হকার উচ্ছেদ করা হচ্ছিল৷ উচ্ছেদ করা হকারদের জন্য হলিডে মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে বিকল্প ব্যবস্থাও করা হয়েছিল৷ কিন্তু শামীম ওসমানের লোকজন উচ্ছেদকারীদের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে৷ একজন তো সরাসরি অস্ত্র নিয়ে মেয়র আইভি রহমানকে গুলি করতে যান বলে অভিযোগ৷
এর আগে আওয়ামী লীগের কক্সবাজার এলাকার এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল রামুতে একজন প্রবীণ শিককে লাঞ্ছিত করেছেন৷ সুনীল কুমার শর্মা নামের ওই শিক্ষককে জামার কলার ধরে গলা ধাক্কাও দেন তিনি৷ স্থানীয়রা বলছেন, সুনীল শর্মা ছিলেন এমপি সাইমুম সরওয়ার ও তার ভাই সোহেল সরওয়ার কাজলের শিক্ষক৷ এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর ছেলে ঢাকায় একটি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক৷ ওই সংগঠন সাইমুমের পছন্দ মতো চলছে না৷ সাইমুমের কথা শোনেননি সুলীল শর্মার ছেলে সুজন শর্মা৷ ছেলেকে হুমকি দিতে এসে তার বাবাকে লাঞ্ছিত করলেন সাইমুম৷ সাইমুমের বড় ভাই রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেলও প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘তার ভাইয়ের উচিৎ শিক্ষকের কাছে মাফ চাওয়া৷’’
এর আগেও কক্সবাজার এলাকার এমপি বদি সরকারী কর্মকর্তাদের পিটিয়ে আলোচনায় আসেন৷ তার বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মদত দেয়ার অভিযোগও এসেছে খোদ সরকারী তরফ থেকে৷ টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের এক নেতা হত্যার দায়ে আরেক এমপি আমানুর রহমান তো জেলেই আছেন৷ এমপিদের বিরুদ্ধে এমন অজস্র অভিযোগ৷ এর বাইরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠছে অনেক৷
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র মাহবুব-উল-আলম হানিফ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যেসব এমপির বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আছে, তারা আগামীতে মনোনয়ন পাবেন না৷ এটা নিশ্চিত৷ আর একটা দেশে তো কিছু ঘটনা ঘটতেই পারে৷ তবে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে কি-না সেটা মূল কথা৷ কোনো ঘটনায়ই ছাড় দেয়া হচ্ছে না৷ এমনকি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী হলেও না৷ নারায়নগঞ্জের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ প্রশাসনকে বলা হয়েছে, দোষী যে-ই হোক, তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে৷ ইতিমধ্যে কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে৷ অন্যরাও গ্রেফতার হবে৷ এখানে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই৷’’
গত এক সপ্তাহ আগে এম এইচ শমরিতা মেডিকেল কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি গালাগালি করে আলোচনায় এসেছেন সাবেক এমপি হাজি এম মকবুল হোসেন৷ মেডিকেল কলেজটির মালিক তিনি৷ ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধি ও বাড়তি ফি আদায় বন্ধসহ কয়েকটি দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থীরা৷ সেখানে যান হাজি মকবুল৷ এরপর এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং খুলি উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন৷
পুরনো একটি বিপণী বিতান ভেঙে প্রকাশ্যে জায়গা-জমি জবর দখলের অভিযোগ উঠে নওগাঁর সাপাহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলীর বিরুদ্ধে৷ সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের উপর হামলা হামলা চালিয়ে মারপিট করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় শাহজাহানের ক্যাডাররা৷
সাম্প্রতিক সময়ে আরো কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার নামও সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে অনাকাঙ্খিত ঘটনার কারণে৷
এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে মানবাধিকার কর্মী নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন ভর করেছে৷ রাজনীতি এখন আর রাজনীতিবিদদের হাতে নেই৷ আগে মানুষ রাজনীতি করত মানুষের জন্য৷ এখন রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করেন নিজের জন্য৷ এখন যারা এমপি, তাদের অধিকাংশই কোটি টাকার মালিক বা কোটি টাকা তিনি অপচয় করেন৷ এখন এই ধরনের রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে আমরা কি আশা করতে পারি? এ কারণে সম্প্রতি যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেটা তো ঘটবেই৷’’
ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতির প্রশ্নপত্র ফাঁস সম্পর্কে একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়ে ঘুরছে ইন্টারনেট জগতে
বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতির প্রশ্নপত্র ফাঁস সম্পর্কে একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়ে ঘুরছে ইন্টারনেট জগতে৷
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি নিউজ তাদের এক টকশো’র শিরোনাম করেছিল ‘ছাত্র লীগের ৭০ বছর’৷ গত ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই টক শো’তে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবং ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগও অংশ নেন৷
আলোচনার এক পর্যায়ে অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক নবনীতা চোধুরী এক দর্শকের প্রশ্ন তুলে ধরে সাইফুর রহমান সোহাগকে বলেন, ‘‘ছাত্রলীগের ভালো কাজ তো অনেক প্রশংসার দাবি রাখেই, আবার অনেক আঘাত পাই, যখন শুনি এইছাত্রলীগের কেউ আবার খারাপ কাজে সেঞ্চুরি করে,বিশ্বজিতের মতো নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে, প্রশ্নপত্রা ফাঁসের মতো কাজে নির্দ্বিধায় জড়িয়ে পড়ে৷ তাহলে ছাত্রলীগ থেকে কী শেখার আছে?”
উত্তরে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘‘যেখানে বাংলাদেশের কোথাও প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো ঘটনাই ঘটে না, সেখানে কিভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত, বলেন?” ছাত্রলীগ সভাপতির এরকম উত্তরে অনেকটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন সঞ্চালক৷
ডিবিসি নিউজে টকশো’টি প্রচার হওয়ার পরপরই ছাত্রলীগ সভাপতির ওই বক্তব্যের অংশটুকুর ভিডিও অনেকে ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেন৷
বাংলাদেশে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা নিয়মিতই ঘটছে৷ আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিষয়টি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে৷
২২ বছর আগের যে ‘জলসা’ এখন ভাইরাল
মেয়র আনিসুল হক চলে গেছেন না ফেরার দেশে৷ কিন্তু রেখে গেছেন কিছু অনবদ্য কাজ৷ বাংলাদেশ টেলিভিশনে আশি থেকে নব্বইয়ের দশকে তাঁর উপস্থাপনায় বেশ কিছু ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠান আজও মনে রেখেছে মানুষ৷ তেমনই একটি অনুষ্ঠান ‘জলসা’৷
আনিসুল হকের মৃত্যুর মাত্র কয়েক মাস আগে বিটিভি-র এই অনুষ্ঠানটি অনেকেই ফেসবুকে শেয়ার করেছেন৷ মৃত্যুর পর নতুন করে অনেকেই শেয়ার করছেন এটি৷
১৯৯৫ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর এটি বিটিভিতে সম্প্রচার হয়৷ চলতি বছরের মে মাসে ইউটিউবে পোস্ট করা হয়েছে ভিডিওটি৷ এ পর্যন্ত ২ লাখেরও বেশি বার দেখা হয়েছে৷ ২২ বছরের পুরোনো একটা ভিডিও কেন এতটা জনপ্রিয় জানতে হলে আপনাকে পুরো অনুষ্ঠানটি দেখতে হবে৷ ইউটিউবে ভিডিওর নীচে চারশ’টিরও বেশি মন্তব্যে সবাই জানিয়েছেন নিজেদের ভালো লাগার কথা, অনেকের শৈশবের কথা৷
তার মধ্যে কয়েকটি এখানে তুলে ধরা হলো:
মাজহারুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘কি প্রাণবন্ত অনুষ্ঠান তখন একটি মাত্র চ্যানেল বিটিভিতে প্রচারিত হত এখন ভাবা যায়? এই পোস্টটি আমাকে ১৯৮০ সালে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে৷ নাটক, সিনেমা, ছায়াছন্দ, গানের অনুষ্ঠান, টারজান, টম অ্যান্ড জেরি, কোনটা রেখে কোনটার কথা বলবো৷ এক মঙ্গলবারে এইসব দিন-রাত্রি তো পরের মঙ্গলবারে ঢাকায় থাকি, প্রতি মাসের শেষ বৃহস্পতিবারে সিনেমা কত কিছু মনে পড়ছে৷ আমরা কি আমাদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে পেরেছি? ভাবা দরকার৷ সরকারের উচিত প্রত্যেক টিভি চ্যানেলকে বিটিভিতে প্রচারিত আগের অনুষ্ঠানগুলোকে পুনরায় প্রচারে বাধ্য করা৷”
শাহজাহান চৌধুরী লিখেছেন, ‘‘অসাধারণ একটি অনুষ্ঠান৷ ২২ বছর আগে সম্প্রচারের দিনই অনুষ্ঠানটি আমার দেখার সুযোগ হয়েছিল৷ আশি এবং নব্বই দশক ছিল ব্যান্ড সংগীতের গোল্ডেন টাইম৷ সে সময়কার রিলিজ হওয়া প্রতিটি ব্যান্ড সংগীত ছিল সকল উঠতি তরুণ-তরুণী এবং যুবক-যুবতীদের মুখে মুখে৷ আনিসুল হকের উপস্থাপনায় ‘এখনই’ ঈদে ‘আনন্দ মেলা’ দেখেছিলাম৷ এত বছর পরে ইউটিউবে অনুষ্ঠানটি আবারো দেখে, অনেক গুলো বিষয় মিলাতে পারি না! অনুষ্ঠানটিতে সবার সৌজন্যবোধ, সংযমী কথা, একে অপরে প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং সবার কথা বলার স্টাইল, এ সবের সাথে কি এখনকার কোন মিল আছে? আমরা আধুনিক এবং উন্নত হতে হতে, নিজেদেকেই ভুলে গেছি বলে মনে হয়! ”
নাজির ইকবাল লিখেছেন, ‘‘২২ বছর পেরিয়ে গেছে! মনে হয় এই তো সেদিন ! তখন ক্লাস নাইনে পড়ি! রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার কণ্ঠে সোলসের গান, পার্থ বড়ুয়ার শচীনকর্তার গান, নকিব খানের রবীন্দ্রসংগীত! আহা দিনগুলা কোথায় হারালো!”
মৃন্ময় নিয়াজ লিখেছেন, ‘‘এই অনুষ্ঠানটা হচ্ছে বাংলা সংগীত ও সাংস্কৃতিক জগতের এক অসামান্য ভিডিও দলিল, দেশের সেরা সব বাঘেরা এক স্থানে, তাদের সাথে হবু বাঘের দল৷”
প্রায় ২২ বছর আগের একটা অনুষ্ঠান আবারও দেখছে লাখো মানুষ৷ এই অনুষ্ঠানের ভিন্নতা এবং উপযোগিতা যে এখনো শেষ হয়ে যায়নি ‘জলসা’ যেন সেটাই মনে করিয়ে দিচ্ছে৷
সংসদে গুম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কী ইঙ্গিত দেয়?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেছেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, অন্য দেশেও গুম হচ্ছে৷ ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে গুমের একটি হিসেব তুলে ধরে সেখানকার অবস্থা আরো ভয়াবহ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি৷ তাঁর এই বক্তব্য কী ইঙ্গিত দেয়?
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ সম্প্রতি কয়েকজন ব্যক্তির নিখোঁজ হওয়া ও মানুষের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ করে মানুষ গুম হচ্ছে, নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে৷ মুক্তিপণ আদায় করা হচ্ছে৷”
তিনি আরো বলেন, ‘‘গত ৫ বছরে নিখোঁজ হয়েছে ৫১৯ জন মানুষ৷ তাঁরা কিভাবে নিখোঁজ হলো? ক’দিন আগে অনিরুদ্ধ রায় ফিরে এলো৷ সে কোথায় ছিল? কে তাদের নিয়ে গেল? অন্যরা ফিরলো না৷ তাহলে বোঝা যাচ্ছে, ঘরে বসে মানুষ খুন হচ্ছে৷ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে৷”
এর প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব, এটা অস্বীকার করছি না৷ বিরোধীদলীয় নেতা গুমের কথা বলেছেন, এই গুম তো বহুভাবেই হচ্ছে৷ অনেকে ফেরতও আসছে৷ কিন্তু ফেরত আসা বা খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে বড় করে খবর হয় না৷” তিনি বলেন, ‘‘কী কারণে হচ্ছে, কোথায় হচ্ছে৷ এটা কি শুধু বাংলাদেশে? ২০০৯ সালের একটি হিসাবে ব্রিটেনে ২ লাখ ৭৫ হাজার ব্রিটিশ নাগরিক গুম হয়ে গেল৷ তার মধ্যে ২০ হাজারের কোনো হদিসই পাওয়া গেল না৷ অ্যামেরিকার অবস্থা আরও ভয়াবহ৷ তাদের সব কিছু তো আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন, তারপরও সেই দেশে এত লোক গুম হয়, তার খোঁজ পাওয়া যায় না৷ ৫৪ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষের বাস৷ এইটুকু ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে এত মানুষের অবস্থান৷ অথচ এই সকল উন্নত দেশগুলোর জনসংখ্যা কত? সেই তুলনায় আমরা অবস্থা অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণে রেখে যখন কোনো ঘটনা ঘটছে সঙ্গে সঙ্গে খোঁজ নিচ্ছি৷”
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘আমাদের একজন স্বনামধন্য আঁতেল ‘গুম’ হয়ে গেলেন৷ পরে দেখা গেল উনি গুম হননি৷ উনি নিজে নিজেই খুলনায় গেলেন৷ পরে তাঁকে খুঁজে পাওয়া গেল৷ এর দোষটা আমাদের৷ এ ধরনের আরও অনেক ঘটনা তো ঘটে যাচ্ছে৷ আমি তার নামধাম বলতে চাই না৷”
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ফরহাদ মজহারের পর গত আড়াই মাসে ১০টি নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে৷ ফরহাদ মজহার অবশ্য নিখোঁজ হওয়ার ১৬ ঘন্টার মধ্যে খুলনা থেকে উদ্ধার হয়েছেন৷ তবে তিনি উদ্ধার হওয়ার পর সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে এখন পর্যন্ত কোনো কথা বলেননি৷ শুধু পুলিশের কাছে এবং আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন৷
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে নিখোঁজ বা অপহরণের শিকার হয়েছেন ২৮৪ জন৷ তাদের মধ্যে মৃতদেহ উদ্ধার হয় ৪৪ জন ব্যক্তির৷ নিখোঁজের পর গ্রেপ্তার দেখানো হয় ৩৬ জনকে এবং পরিবারের কাছে বিভিন্নভাবে ফিরে আসেন ২৭ জন৷ তবে এখনও ১৭৭ জনের কী অবস্থা তা জানা যাচ্ছে না৷ তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা পরিবার বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ বলতে পারছেন না৷
আসক-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এরমধ্যে অনেককেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেয় হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ এমনকি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাকেও অপহরণের অভিযোগ আছে৷ আর প্রতিটি অপহরণ ও নিখোঁজের ঘটনার পরই পরিবারের পক্ষ থেকে সহায়তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিতে গেলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কোনও উত্তর দিতে পারে না৷
বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ২০১৩ সাল থেকে শত শত মানুষকে বেআইনিভাবে গোপন স্থানে আটকে রেখেছে বলে কিছু দিন আগেই অভিযোগ তোলে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও গুমের অভিযোগ করে আসছে৷
সম্প্রতি নিখোঁজ ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী ফিরে এলেও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক মোবাশ্বার হাসান সিজার ও সাংবাদিক উৎপল দাশের সন্ধান এখনও মেলেনি৷
আসক-এর সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং মানবাধিকারকর্মী নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা সত্য যে উন্নত অনেক দেশেই গুমের ঘটনা ঘটে৷ কিন্তু তার সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য আছে৷ ওইসব দেশে ঘটনা ঘটার পর রাষ্ট্র অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসে৷ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার বিচার ও ক্ষতিপুরণ পায়৷ কিন্তু বাংলাদেশে দৃশ্যত গুমের কোনো কার্যকর তদন্ত হয় না৷ সংসদে যদি বিষয়টি নিয়ে ধৈর্য্য সহকারে আলোচনা হতো, প্রস্তাব উত্থাপন হতো, সেটি বরং সাধারণ মানুষের জন্য, আমার জন্য অনেক উপকারে আসতো৷ যাঁরা গুমের শিকার হয়েছেন, তাঁদের পরিবার আশ্বস্ত হতে পারতো যে, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এক ধরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ হয়তো তাঁরা তাঁদের নিখোঁজ স্বজনদের ব্যাপারে জানতে পারবেন৷ জীবিত না হলেও তাঁদের কবর কোথায় তা জানতে পারবেন৷”
তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘অপহরণের পর যাঁরা ফিরে এসেছেন এবং অপহৃতদের স্বজনদের সঙ্গে আমরা কথা বলে জেনেছি, যারা গুম করে বা অপহরণ করে নিয়ে যায়, তারা স্মার্ট, দক্ষ, প্রশিক্ষিত এবং তাদের শারীরিক গঠন শক্তিশালী৷ আর অপহৃতদের এমন জায়গায় রাখা হয়, যেখানে জনসাধারণের প্রবেশ নিষেধ৷”
নূর খান আরো বলেন, ‘‘রাষ্ট্র এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে না, যা প্রশ্ন তৈরি করে৷ নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনার পর এটা আশঙ্কা করা যায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো একটি অংশ এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে৷ অথবা যারা করছে তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়েও শক্তিশালী৷”
এদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘অতীতে গুমকে সরাসরি অস্বীকার করা হতো৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে স্বীকার করেছেন যে, গুম হচ্ছে৷ সেটার ভয়াবহতা কোন মাত্রায় তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে৷ প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি এড়িয়ে যাননি৷ বরং কোথায় গলদ আছে তা চিহ্নিত করার কথা বলেছেন৷ তিনি আরো বলেছেন মাথায় পচন ধরেনি৷ তাই শরীরের অন্য কোনো অংশে যদি কোনো ক্ষতের সৃষ্টি হয় তা সারাতে তিনি ব্যবস্থা নেবেন এই আশা আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে করতে পারি৷”
ড. মিজান বলেন, ‘‘গুমের বিচার এখন আর এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নাই৷ জাতিসংঘে গৃহীত গুম বিষয়ক সনদে এটাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং মানবতাবিরোথী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে৷ তাই বিশ্বের যে কোনো দেশ অন্য কোনো গুমের ঘটনার বিচার করতে পারে৷ এ দেশে যদি বিচার না হয়, তাহলে এই বিচার বিশ্বের অন্যকোনো দেশেও হতে পারে৷ গুম একটি জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ৷ আর সেটা এখন আন্তর্জাতিকভাব স্বীকৃত৷”